তোমার তুলনা তুমি
—দীপক রঞ্জন রায়
তোমার জন্ম হয়েছিল
ঠিক একটি ঝড়ের পূর্বে মেঘ, বজ্রের মত,
অগ্নুৎপাতের পূর্বে পৃথিবী কেঁপে ওঠার মত,
যুদ্ধে যাওয়ার আগে সেনাপতি নির্ধারণের মত,
চলছিল, গোটা ভারতবর্ষ জুড়ে বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন।
স্নিগ্ধ শ্যামল পাটগাতির টুঙ্গিপাড়ায় তোমার জন্ম,
যেন আগ্রাসনের রাজ্যে ত্রাতার আবির্ভাব,
জুলুম অন্যায়ের বিরুদ্ধে, সত্য প্রতিষ্ঠায় আল্লাহর প্রেরিতদূত।
বাল্য থেকেই গরীব দুখিরা তোমার দয়া লাভ করেছে,
খেলার মাঠে তুমি রাজা
স্কুলে দাবি আদায়ে, তুমি যোগ্য নেতা,
তোমার মহিমা, ইতিহাস গাঁথা।
তোমার যৌবন, তোমার শিক্ষা
মহা তারুণ্যের সবুজ তপোবন,
সেখানে কখনও বাঘের গর্জন
কখনও মৈত্রীর আবাহন
শিক্ষা রাজনীতি মিশে একাকার।
ভাঙ্গা গড়ার রাজনীতিতে টিকে থাকা
আলোক বর্তিকা তুমি
রাজনীতির প্রচন্ড উজোনে, সফল নৌকার নাবিক
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ছয় দফা, এগারো দফা বহু আন্দোলনের পুরোধা।
সেই তোমাকে মানুষ অন্ধের মত অনুসরণ করেছে।
তোমার সাত মার্চের ভাষনে, স্বাধীনতার ডাক
মানুষের রক্তে বিপ্লব এনেছিল
বিপ্লব থেকে আন্দোলন, আন্দোলন থেকে যুদ্ধ।
সবুজ ঘাসে রক্তের আলপনা
তাজা রক্তে দেশপ্রেমের গন্ধ
স্বাধীন দেশ, সবুজের বুকে লাল পতাকা।
ধ্বংস স্তুপে দাঁড়িয়ে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন,
বৈদেশিক সহযোগীতা, কাজ শুধু কাজ।
সয্য হলো না ওদের————–
পনেরো আগষ্ট রাতে ওরা তোমাকে খুন করল!
বাংলায় আবার করুণ সুর
পিতাকে হারিয়ে বাঙালির কান্না
শোকে স্তব্ধ আকাশ বাতাস,
গোটা দুনিয়ার ধিক্কার, হতবাক পৃথিবী!
প্রশ্ন, এও কি সম্ভব?
হে হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙালী,
জাতির পিতা, স্বাধীন বাংলার স্বপ্ন দ্রষ্টা, ত্রাতা
তোমার মৃত্যু নেই,
তুমি চিরকাল বেঁচে রবে, বাঙালির আদর্শে, আন্দলোনে, চিন্তায়, মন ও মননে।