রংপুর ব্যুরো:
শরতের বিদায়ের পর চলছে হেমন্তকাল। কুড়িগ্রামে সাত সকালে বয়ে আসা হিমেল হাওয়ায় টের পাওয়া যাচ্ছে, ধীর পায়ে শীত নামছে প্রকৃতিতে। সাদা মেঘের ভেলা ভাসিয়ে শীতের আগমনী বার্তায় ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে ভোরের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ, রাস্তাঘাট ও গ্রামীণ জনপদ।
অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে প্রকৃতিতে হাল্কা শীতের উপস্থিতি পরিলক্ষিত হলেও ভোরের কুয়াশার চাদরে ঢাকা রাস্তাঘাট ও গ্রামীণ জনপদই যেনো জানান দিলো হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত উত্তরের সীমান্ত ঘেঁষা জেলা কুড়িগ্রামে শীতের আগমনী বার্তা। ক্রমেই কমছে বাতাসের আর্দ্রতা আর বাড়ছে হিমেল ঠাণ্ডা পরশ। বর্তমানে দিনের বেলায় গরম ও রাতের বেলা শীত অনুভূত হচ্ছে।
হটাৎ ঠাণ্ডার কারণে ভোর বেলা শরীরে কাঁথা মুড়িয়ে বাইরে বের হচ্ছে মানুষ। ভোরবেলা কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে চারিদিক। রাস্তায় চলাচলকারী যানবাহনগুলোকে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে।
শীতের আগমনে গ্রামাঞ্চলের বৃদ্ধদের ও শিশুদের শীতের কাপড় পরিধান করে পথ চলতে দেখা গেছে। এসময় কথা হয় কুড়িগ্রাম সদরের গুচ্ছ গ্রাম মৌলভী পাড়া এলাকার মুরসালিন (৮), মিলন (৭) ও নয়ন (৬) এর সাথে, তারা জানান, ভোরে আমরা মসজিদে যাই হুজুরের কাছে আরবী পড়তে। দুদিন থেকে ভোরে একটু একটু করে শীত পড়ছে। শীতের পরিমান দিন দিন একটু বেশী হচ্ছে। এছাড়াও সকালে পানিতে অযু করতে ঠান্ডা লাগে।
পাঁচগাছি ইউনিয়নের নওয়াবস এলাকার জয়নাল মিয়া (৬০) জানান, আমি দিনমজুরের কাজ করি। কয়েক দিন থেকে হাল্কা শীত পড়তেছিল। কিন্তু আজ শীতের পরিমান বেশী হওয়ায় ঠান্ডা বেশী অনুভব হওয়ায় বাধ্য হয়ে শীতের কাপড় পরে কাজে যাচ্ছি। আমাদের তো শীতের ভারি কাপড় নেই, কিন্তু শীত বাড়লে তো ঘর থেকেই বের হতে পারিনা। পাটেশ্বরী এলাকার রহমত আলী (৫৫) জানান, আমি কুড়িগ্রাম শহরে যাচ্ছি ব্যবসার কাজে। আজ শীত বেশী অনুভব হওয়ায় সাইকেলে চড়ে ঠান্ডা লাগছে।
স্থানীয়রা জানান, দিনের বেলা বেশ গরম থাকলেও সন্ধ্যা নামার পর থেকেই কুয়াশা পড়তে শুরু করে। মধ্যরাত থেকে বৃষ্টির মত টুপটুপ করে কুয়াশা ঝরতে থাকে। বিশেষ করে প্রকৃতিতে থাকা ছোট ছোট গাছের লতা পাতা সহ মাকড়সার জালেও শিশির লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) এর সকাল রিপোর্ট অনুযায়ী জানান, কুড়িগ্রামের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমে আসতেছে। কুড়িগ্রামে অক্টোবর মাঝামাঝি সময় থেকে প্রকৃতিতে শীতের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। তবে আজ ভোরে প্রকৃতিতে কুয়াশার পরিমান ছিল বেশী। এ শীত আগামী বছরের ফেব্রুয়ারীর মাঝামাঝি সময়ে শেষ হবে।