রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদ ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন:
“বিশ্বসভায় দেশমাতৃকার উজ্জ্বল প্রতিনিধি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সুদীর্ঘকাল ধরে জ্ঞানচর্চায় উদ্ভাসিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আটানব্বই বছরে পদার্পণ উপলক্ষে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই উপমহাদেশে উচ্চশিক্ষার বিস্তার, জ্ঞান আহরণ-বিতরণ ও সৃষ্টিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনন্য ভূমিকা পালন করে চলেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করেই বাঙালি জাতির রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জাগরণ ঘটেছে এবং এরই ক্রমধারায় অভ্যুদয় ঘটেছে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম এবং দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তবুদ্ধির প্রাঙ্গণ থেকেই দেশের সাধারণ মানুষের মুক্তির স্বপ্ন দেখেছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বুদ্ধিজীবী নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। আমি তাঁদের স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা।
সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলা এই বিদ্যাপীঠ বিশ্বমানস্পর্শী শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। রাষ্ট্রের আশা-আকাঙ্ক্ষার ধারক ও বাহক ঐতিহ্যবাহী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এবারের প্রতিষ্ঠা দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে ‘গুণগত শিক্ষা, প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরণ’ – যা এ প্রতিষ্ঠানের আত্মোন্নয়নের আন্তরিক প্রচেষ্টাকেই তুলে ধরে।
২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রয়োজন জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা। মানসম্মত উচ্চশিক্ষা প্রদান এবং গবেষণার মাধ্যমে নতুন নতুন জ্ঞান সৃষ্টিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রণী ভূমিকা রাখবে- এটাই সকলের প্রত্যাশা। বিশ্বায়নের এ যুগে নবতর উদ্ভাবনের সাথে পরিচিতি ঘটানো, গবেষণার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ এবং গবেষণালব্ধ জ্ঞান দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজে লাগাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।
আমি ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”