ডুমুরিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি:
ডুমুরিয়ায় আরতী দাস (২৪) নামে দু’সন্তানের জননীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার গোনালী গ্রামে। নিহতের পরিবারের দাবী তাকে মারপিট ও নির্যাতন করে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে।
তাঁর মৃত্যু নিয়ে এলাকায় চলছে নানা গুঞ্জন। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড হয়েছে। থানা পুলিশ ও নিহত গৃহবধুর পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গোনালী গ্রামের আনন্দ দাসের ছেলে সুজন দাসের সাথে পাশ্ববর্তী যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোর্ট এলাকার পাঁচপোতা গ্রামের দিবস দাসের বোন আরতী দাসের ১০ বছর আগে বিয়ে হয়। দাম্পত্ত জীবনে তাদের সংসারে রাজু (৭) ও রাহুল (৩) দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
গত সাড়ে তিন বছর আগে নিহত গৃহবধুর স্বামী সুজন দাস স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। তার পর থেকে আরতী দাস দুটি সন্তান নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে বসবাস করতে থাকে। পরবর্তিতে আরতী তার শশুরকে মৃত স্বামীর সম্পত্তি ছেলে দুই জনের নামে লিখে দেয়ার জন্যে দাবী জানায়। কিন্তু বাধ সাধে আরতীর বিবাহিত ননদ শিখা দাস (৩০)। সুজনের মৃত্যুর পর শিখা দাস প্রায় সময় তার বাপের বাড়িতে অবস্থান করে আরতীকে নানা ভাবে শারিরীক ও মানুষিক নির্যাতন করতো বলে জানা যায়।
ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার বিকেলে আরতীর ছোট ছেলের সাথে শিখা দাসের ছেলের ঝগড়া ও মারামারি হয়। ওই ঘটনার জের ধরে রাতে শিখা দাস ও তার মা চায়না দাস আরতি দাসের সাথে ঝগড়া ও এক পর্যায়ে তাকে মারপিট করে। রাত ১১ টার দিকে আরতী দাস মোবাইল ফোনে তার ভাই দিবস দাসকে ননদ ও শাশুড়ি কর্তৃক মারপিটের ঘটনা জানায়। ওই সময় দিবস তার বোনকে বিষয়টি স্থানীয় মেম্বরকে জানাতে বলে। আনন্দ দাস আরো জানান, রাত প্রায় আড়াইটার দিকে আরতীর শশুর বাড়ির পার্শ্ববর্তী লোকজন ফোন করে জানায় আরতী গলায় ফাঁস দিয়েছে। তার শশুর- শাশুড়ি তাকে উদ্ধার করে ডুমুরিয়া হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যে নিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে শাশুড়ি চায়না দাস আরতিকে মারপিটের ঘটনা অস্বীকার করেন। তবে চায়না দাসের সাথে আরতির ঝগড়া ও মারামারির ঘটনা স্বীকার করে বলেন, আমি বাড়ির পার্শ্ববর্তী একটি বাড়িতে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ছিলাম। বাড়িতে চিৎকার চেচামেচি শুনে এসে দেখি ঘরের দরজা দিয়ে বউমা গলায় শাড়ী পেচিয়ে ঝুলে আছে। আমরা তাড়াতাড়ি দরজা ভেঙ্গে তাকে উদ্ধার করে ডুমুরিয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার বলে আরতি আর বেঁচে নেই। লাশের সুরত হাল রিপোর্ট প্রকালে ঘাড়ের ডান পাশে ও বাম হাতের তালুতে রক্ত এবং দুই পায়ে ও বুকে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, ডুমুরিয়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গৃহবধু আরতী দাসে বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু দায়ের করেছে। সুরত হাল রিপোর্ট তৈরী করে লাশ ময়না তদন্তের জন্যে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।