নিজস্ব প্রতিবেদক :
তেরখাদা উপজেলার ছাগলাদাহ ইউপি চেয়ারম্যান এস এম দীন ইসলামের সীমাহীন দুর্নীতি, গরীবের অর্থ আত্মসাৎ, সরকারি প্রকল্প লুটপাটসহ বহুবিধ অনিয়মের প্রতিবাদে ২২ জুলাই সোমবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা ছাত্রলীগের সদস্য ও ইছামতি গ্রামের বাসিন্দা কাজী তরিকুল ইসলাম তরু। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ছাগলাদাহ ইউপি চেয়ারম্যান এস এম দীন ইসলাম পৈতৃক সূত্রে মাত্র ২ বিঘা জমির মালিক ছিলেন। তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে মাত্র ৭/৮ বছরের ব্যবধানে বাড়ি, গাড়ি, জমাজমি, দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। তিনি অগণিত প্রকল্প লুটপাট করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন। যারা তার মুখোশ উন্মোচন করতে চান তাদেরকে তিনি বিভিন্ন কৌশলে দমন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। মাত্র ৭/৮ বছর আগে যার বসবাসের টিনের ঘর দিয়ে পানি পড়ত, সেই ঘর এখন হয়েছে রাজ প্রাসাদ। দ্বিতল ভবনের বাইরে ভিতরে টাইলস্ এবং প্রত্যেক রুমে এখন এসি স্থাপন করা হয়েছে। শুধু গরীবের টাকা লুন্ঠনই নয় সরকারি টাকা লুট করে তিনি কালো টাকার মালিক হয়েছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।
তরিকুল বলেন, উক্ত ইউপি চেয়ারম্যান ২০১৩ সালে এল জি এস পি প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হন। তার বিরুদ্ধে এলজিএসপির ৩০ লাখ সরকারি টাকা ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে আত্মসাৎ, ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচি প্রকল্প থেকে ২৫ লাখ টাকা এবং কাবিটা প্রকল্পে ভুয়া প্রকল্প কমিটি দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ, ছাগলাদাহ ইউনিয়নে ভেড়িবাঁধ নির্মাণের নামে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এমনকি ওই চেয়ারম্যান সম্প্রতি ভিজিডি কার্ডধারী হিন্দু কুশলা এলাকার সালেহা বেগম এবং ধানখালি এলাকার সেতারা বেগমসহ বহু কার্ডধারীর জমাকৃত ৬ হাজার টাকা থেকে মাত্র ১৬শ’ টাকা করে ফেরত দিয়েছেন। বাকী ৪৪শ’ টাকা লোপাট করেছেন। তিনি জমি আছে ঘর নেই প্রকল্পে ঘর দেয়ার জন্য জুনারী গ্রামের দীন ইসলামের নিকট থেকে ৪০ হাজার, বাদশা শেখ এর নিকট থেকে ৩০হাজার, জাকির তালুকদারের নিকট থেকে ৩০ হাজারসহ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের লোকদের কাছ থেকে ঘর দেয়া বাবদ টাকা নিয়েছেন বলেও অভিযোগ করা হয়। কিন্তু ঘর, টাকা কিছুই ফেরত দেয়া হয়নি।
তিনি খুলনা কেডিএ’র ময়ূরী প্রকল্পে ৩ কাঠার একটি প্লট কিনেছেন যার মূল্য ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, তেরখাদা সদরে ৮ কাঠা জমিসহ তেরখাদার বিভিন্ন বিলে প্রায় কয়েক কোটি টাকার সম্পদ কিনেছেন। শুধু জমি কিনেই ক্ষান্ত হননি, তেরখাদা সুপার মার্কেটে ৩৫ লাখ টাকা দিয়ে ৩টি দোকান, কুমিরডাঙ্গা বাজারে সরকারি জমি দখল করে দুইটি, ছাগলাদাহ বাজারে নিজ নামে মার্কেট, মসুন্দিয়া বাজারে সরকারি জমি দখল করে পাকা বিল্ডিং, ইছামতি বাজারে সরকারি ভূমিতে ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে বিল্ডিং এবং ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকায় একটি ফ্লাট কিনেছেন। তিনি জোর পূর্বক ছাগলাদাহ ইউনিয়ন আদিল উদ্দিন স্মরণিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিতে কয়েক দফা সভাপতি হওয়ার সুবাদে নিয়োগ বাণিজ্য করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন এমন অভিযোগও আনা হয়।
এভাবে আরও নানা দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ করা হয় উক্ত ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে তিনি দলীয় নেতাদের পাশাপাশি দুদকসহ অন্যান্য সংস্থার সহযোগিতা কামনা করেন। কেননা এতে দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।